রমজান সামনে রেখে কারসাজি

Shafiul
প্রতিবেদন প্রকাশ: ১৭ জানুয়ারি ২০২৪ | সময়ঃ ০৬:১২
photo

অপরাধ সূত্র :

অতীতে লক্ষ করা গেছে, রমজান শুরুর কয়েক মাস আগে থেকেই বাজারে নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়। এবারও একই প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে। রোজার ছয় পণ্য-ছোলা, ভোজ্যতেল, চিনি, পেঁয়াজ, মসুর ডাল ও খেজুর নিয়ে এবারও অসাধুচক্র কারসাজি শুরু করেছে; বাড়তি মুনাফা করতে ডিসেম্বর থেকেই দাম বৃদ্ধি অব্যাহত রেখেছে। রোজায় মূল্য বেড়েছে-এমন অভিযোগ থেকে রক্ষা পেতেই এ কৌশল নিয়েছে অসাধুরা। আমদানি জটিলতার অজুহাত পুঁজি করেই চক্রটি এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। বাজারে চাল, মসলাসহ সব ধরনের সবজি এবং বেশকিছু খাদ্যপণ্য বাড়তি দরে বিক্রি হচ্ছে।

 

জানা যায়, বছরের শুরুতে মোটা চাল, প্যাকেটজাত আটা, ময়দা, মসুর ও মুগ ডাল, পেঁয়াজ, রসুন, আদাসহ চার ধরনের মসলা ও ব্রয়লার মুরগি-এ ১৩ পণ্যের দাম বেড়েছে; কোনো ক্ষেত্রে ২ টাকা, কোনো ক্ষেত্রে ৫০ টাকা। এমন প্রেক্ষাপটে ভোক্তারা শঙ্কায় আছেন-এ বছরও রমজানে অসাধু ব্যবসায়ীরা বাড়তি দরে খাদ্যপণ্য কিনতে সাধারণ মানুষকে বাধ্য করবেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, কঠোরভাবে তদারকি না করলে রোজার মাসে স্বস্তির পরিবর্তে চাপে থাকবে ভোক্তারা। আমরা প্রতিবছর রমজান শুরুর আগে সরকারের পক্ষ থেকে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার বিষয়ে নানা রকম স্বস্তিদায়ক বক্তব্য ও আশ্বাস শুনতে পাই। তবে অভিজ্ঞতা বলে, শেষ পর্যন্ত বাজারের নিয়ন্ত্রণ চলে চায় সিন্ডিকেটের হাতে।

এবার রমজানে যাতে নিত্যপণ্যের ঘাটতি না হয়, সেজন্য বাংলাদেশ ব্যাংক একটি বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে। পবিত্র রমজান সামনে রেখে আট খাদ্যপণ্য বাকিতে আমদানির সুযোগ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। খাদ্যপণ্যগুলো হচ্ছে-ভোজ্যতেল, ছোলা, ডাল, মটরশুঁটি, পেঁয়াজ, মসলা, চিনি ও খেজুর। বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা ও নীতি বিভাগ সম্প্রতি এ বিষয়ে এক প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এতে বলা হয়, এসব পণ্য ৯০ দিনের বায়ার্স ক্রেডিটের আওতায় আমদানি করা যাবে।

 

এ সুবিধায় আমদানির সুযোগ থাকবে ৩১ মার্চ পর্যন্ত। এছাড়া যেসব রোজানির্ভর পণ্য ইতোমধ্যে আমদানি করা হয়েছে বা এলসির দায় পরিশোধের সময় এসেছে, সেগুলোর দেনা ব্যাংক বা উদ্যোক্তারা পরিশোধের জন্য ডলারের সংস্থান করতে না পারলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে জোগান দেওয়া হচ্ছে। আমদানি ও এলসি খোলার তথ্য বিশ্লেষণের পর কেন্দ্রীয় ব্যাংক মনে করে, গত এক বছরের ব্যবধানে আন্তর্জাতিক বাজারে দু-একটি ছাড়া বেশির ভাগ পণ্যের দামই কমেছে। এমন প্রেক্ষাপটে আসন্ন রোজায় নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ার কথা নয়।

 

দুবছর ধরে ভোজ্যতেল, চিনিসহ কয়েকটি পণ্য নিয়ে বড় ধরনের কারসাজি করা হলেও দোষীদের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করা হলেও তা কার্যকর করা যায়নি। এ অবস্থা চলতে থাকলে আসন্ন রোজার মাসে স্বস্তির পরিবর্তে চাপেই থাকবে ভোক্তারা। রোজায় বিভিন্ন ধরনের দেশি ফলের পাশাপাশি আমদানিকৃত ফলের চাহিদাও থাকে। ফলের বাজারে যাতে অস্থিরতা না থাকে, কর্তৃপক্ষকে সেদিকেও দৃষ্টি দিতে হবে। রোজার মাসে বেশি ব্যবহৃত হয় এমন পণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে কঠোর মনিটরিং অব্যাহত রাখতে হবে। কর্তৃপক্ষের নেওয়া পদক্ষেপের সুফল ভোক্তারা কেন পায় না, তাও খতিয়ে দেখতে হবে।

 

  • নিউজ ভিউ ১২৫