অপরাধ সূত্র :
আমিনুল ইসলাম বাবু:
পরিকল্পিত নগর গঠনের জন্য প্রতিষ্ঠিত রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ইমারত পরিদর্শকদের উদাসীনতা, দায়িত্ব অবহেলা ও দূর্নীতি পরায়নতাই পরিকল্পিত নগর নির্মাণের অন্তরায় হয়ে দাড়িয়েছে। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে পাওয়া গিয়েছে এমন তথ্য। রাজউকের ৮টি জোন এর মধ্যে জোন ৩ এর ১ অঞ্চল ভূক্ত পল্লবী এলাকায় ইস্টার্ন হাউজিং এর পরিকল্পিত আবাসিক এলাকায় রয়েছে অসংখ্য ভবন যেখানে অধিকাংশ ভবনে অনুসরণ করা হয়নি রাজউক এর ভবন নির্মাণ বিধি। এসকল ভবন নির্মাণ করা হয়েছে অতিমাত্রায় ডেভিয়েশন, রাখা হয়নি পর্যাপ্ত পরিমাণ ভয়েড নির্বিঘ্নে আলো বাতাস প্রবেশের জন্য। এমন-ই কিছু ভবনের বিষয়ে কয়েকজন ইমারত পরিদর্শক এর নিকট জানতে চাইলে তাহারা সাপ্তাহিক অপরাধ সূত্র কে বলেন, যে সকল ভবন নির্মাণ সম্পন্নের পথে সেগুলোতে আমাদের করনীয় কিছুই থাকে না। আমরা এলাকার নতুন দায়িত্ব প্রাপ্ত হয়ে বেশকিছু ভবন পরিদর্শন করে দেখেছি, পূর্বতন ইমারত পরিদর্শক গণ অধিকাংশ নির্মাণাধীন ভবনের মালিকদের কোন নোটিশ প্রদান করেনি। ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ পর্যায়ে থাকলে কার্যত আমাদের কিছু করার থাকেনা।
পূর্বে পল্লবী, বর্ধিত পল্লবী, ইস্টার্ন হাউজিং ও আরিফাবাদ এলাকায় দায়িত্ব পালন করে গিয়েছেন ইমারত পরিদর্শক মুরাদ হোসেন ও ইমারত পরিদর্শক আল নাঈম মুরাদ। রাজউকের এই ইমারত পরিদর্শক দ্বয় তাহলে কি দেখভাল করেছেন এটাই এখন জনমনে প্রশ্ন? এবিষয়ে ইমারত পরিদর্শক মুরাদ হোসেন ও ইমারত পরিদর্শক আল নাঈম মুরাদ এর মুঠোফোনে যোগাযোগ করে ও ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েও কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।
রাজউকের ইমারত পরিদর্শকদের দায়িত্বে অবহেলা ও দূর্নীতি পরায়নতায় রাজউকের ভবন নির্মাণ বিধি লঙ্ঘন করায় উৎসাহিত করে ভবন নির্মাণকারীদের। ইমারত পরিদর্শকদের এহেন কর্মকাণ্ডে একদিকে যেমন রাজউকের পরিকল্পিত নগর গঠনের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে অপরদিকে পকেট ভারী হচ্ছে।
রাজউকের ইমারত পরিদর্শকদের কর্তব্য অবহেলা ও দূর্নীতি পরায়নতা সম্পর্কে জানতে রাজউক জোন ৩ এর পরিচালক শীলাব্রত কর্মকার এর অফিসে গিয়ে পাওয়া যায়নি।
ইমারত পরিদর্শকদের কর্তব্যের অবহেলা ও দূর্নীতির শাস্তি স্বরূপ কেবল এলাকা পরিবর্তন বা অন্য জোনে বদলী না করে কঠোরতম শাস্তি প্রয়োগের ব্যবস্থা করলে ইমারত পরিদর্শকগণ তাদের কর্তব্যে নিষ্ঠাবান হতেন বলে মত প্রকাশ করেন নাম প্রকাশ না করার শর্তে রাজউকের কয়েকজন নগর পরিকল্পনাবীদ।
নগর পরিকল্পনাবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস প্রফেসর জনাব নজরুল ইসলাম সাপ্তাহিক সূত্রের প্রতিবেদককে বলেন, রাজউকের কর্মকর্তাগন যথাযথ ভাবে দায়িত্ব পালন করলে ও রাজউক এর ভবন নির্মাণ নীতিমালার যথাযথ প্রয়োগে ভবন নির্মাণকারীদের উদ্বুদ্ধ করা হলে একটি পরিকল্পিত নগর গঠন করা অসম্ভব কোন বিষয় না। জনগনকে বোঝাতে হবে পরিকল্পিত ও অপরিকল্পিত নগরায়নের সুবিধা অসুবিধা। প্রয়োজনে প্রচার প্রচারণার ব্যবস্থাগ্রহণ করা যেতে পারে। সর্বোপরি রাজউকের নীতিমালায় বিধি লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে আরও অধিক পরিমাণ অর্থ জরিমানা ও শাস্তির বিধান সংযোজন করা যেতে পারে।