মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড: সোহাগকে কেন্দ্র করে ইসহাক সরকারকে জড়ানোর চেষ্টা

Shafiul
প্রতিবেদন প্রকাশ: ১৯ জুলাই ২০২৫ | সময়ঃ ১২:৩৭
photo

অপরাধ সূত্র :

স্টাফ রিপোর্টার : এইচ. এম. বাবলু 

 

ঢাকার মিটফোর্ড এলাকায় আলোচিত ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগ হত্যা মামলার তদন্তে একাধিক নতুন তথ্য সামনে আসায়, এটি নিয়ে দেশজুড়ে তৈরি হয়েছে ব্যাপক চাঞ্চল্য। প্রাথমিকভাবে এটি ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক বিরোধ থেকে সংঘটিত একটি অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত হলেও, ঘটনাটিকে ঘিরে রাজনৈতিক বিতর্কও মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। হত্যাকাণ্ডের সাথে বিএনপির স্থানীয় নেতা মোহাম্মদ ইসহাক সরকারের নাম ঘুরেফিরে আলোচনায় আসায় নানা প্রশ্ন উঠেছে। যদিও পুলিশ বা মামলার এজাহারে তার কোনো সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া যায়নি, তবুও গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে তাকে জড়িয়ে একাধিক খবর প্রকাশিত হয়েছে। ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এস এন মো. নজরুল ইসলাম জানান, ব্যক্তিগত ও ব্যাবসায়িক দ্বন্দ্বের জেরে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। সোহাগ দীর্ঘদিন ধরে পল্লীবিদ্যুতের চোরাই তারের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন এবং বেশ কয়েকজনের সঙ্গে তার বিরোধ ছিল। গত ৯ জুলাই বিকালে মিটফোর্ড হাসপাতালের ৩ নম্বর গেটের সামনে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও ইট-পাথর ছুড়ে তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। ঘটনার পরপরই পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে দুইজনকে গ্রেফতার করে এবং পরে আরও সাতজনসহ মোট ৯ জনকে আটক করা হয়। মামলার প্রাথমিক খসড়া এজাহারে ২৩ জনের নাম থাকলেও পরবর্তীতে বাদীর সম্মতিতে ১৯ জনকে আসামি করে চূড়ান্ত অভিযোগ দায়ের করা হয়। এখানেও ইসহাক সরকারের নাম উল্লেখ করা হয়নি। তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া খসড়া এজাহারের ছবি এবং গণমাধ্যমের একাংশে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে তার নাম ঘুরেফিরে আসতে থাকে। ১৫ জুলাই রাতে নিজের ফেসবুক পেইজে এক বিবৃতিতে ইসহাক সরকার বলেন: > "আমি আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করছি যে, আমি আজ বেঁচে আছি। এই ঘটনার মাধ্যমে আমাকে টার্গেট করে একটি চরম ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল।" তিনি দাবি করেন, তিন মাস আগে এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত কয়েকজন ব্যক্তি তাকে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছিল এবং তখন কোনো বিচার হয়নি। সেই ঘটনার ধারাবাহিকতায় এখন পরিকল্পিতভাবে তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে। তিনি আরও বলেন, > "আমার বিরুদ্ধে ৩৬৬টি মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে, এমনকি আমার পরিবারকেও ছাড় দেওয়া হয়নি। আমি একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের কর্মী। সামনে নির্বাচন, তাই আমাকে দমন করতে এই ষড়যন্ত্র।" এই মামলায় যাদের আসামি করা হয়েছে, তাদের মধ্যে অনেকেই এখন পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন—নান্নু, মাহমুদুল হাসান মহিন, তারেক রহমান রবিন, মনির ওরফে লম্বা মনির, আলমগীর, টিটন গাজী, রাজীব ব্যাপারী, সজীব ব্যাপারী ও রিজওয়ান উদ্দিন অভি। যদিও পুলিশ স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নেই, তবে একটি বড় অংশের বিশ্লেষণ বলছে—এই ঘটনাটি রাজনৈতিকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। একজন সম্ভাব্য জনপ্রিয় প্রার্থীকে ঘিরে তৈরি হওয়া বিতর্ক নির্বাচনের আগেই তার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে ব্যবহৃত হচ্ছে বলেও অনেকেই মনে করছেন।

  • নিউজ ভিউ ২৬৭