নোয়াখালীতে পরাজিত স্বতন্ত্র প্রার্থীর এজেন্টকে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৩

Shafiul
প্রতিবেদন প্রকাশ: ১৭ জানুয়ারি ২০২৪ | সময়ঃ ০৪:১৯
photo

অপরাধ সূত্র :

নোয়াখালী-২ (সেনবাগ ও সোনাইমুড়ী আংশিক) আসনে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহা. আতাউর রহমান ভূঁইয়ার এজেন্ট শহিদুজ্জামান ওরফে পলাশকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল রোববার রাতে নাটেশ্বর এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করে সোনাইমুড়ী থানার পুলিশ।

 

একই রাতে নিহত শহিদুজ্জামানের স্ত্রী শারমিন আক্তার বাদী হয়ে সোনাইমুড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলার এজাহারে কারও নাম উল্লেখ করেননি তিনি।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন নাটেশ্বর গ্রামের মো. আহসান উল্যাহ ওরফে কল্লা হাসান (৩৮), পূর্ব মির্জানগর গ্রামের মো. আকবর হোসনে ওরফে সোহেল (৩৬) ও একই গ্রামের মো. মিরাজ (২১)। আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ আসামিরা হত্যাকাণ্ডের আগে-পরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকার কথা স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। পরে দুপুরে তাঁদের নোয়াখালীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানো হয়।

 

গত শনিবার রাতে স্থানীয় লোকজনের তথ্যের ভিত্তিতে সোনাইমুড়ী উপজেলার নাটেশ্বর ইউনিয়নের পূর্ব মির্জানগর গ্রামের একটি নতুন বাড়ি থেকে শহিদুজ্জামানের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। শহিদুজ্জামান দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পূর্ব মির্জানগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহা. আতাউর রহমান ভূঁইয়ার (তমা মানিক) কাঁচি প্রতীকের পোলিং এজেন্ট ছিলেন।


আতাউর রহমান ভূঁইয়ার অভিযোগ, ৭ জানুয়ারির ভোটগ্রহণ চলাকালে জাল ভোট ও কেন্দ্রে প্রভাব বিস্তারের প্রতিবাদ করায় নৌকার সমর্থকেরা তাঁকে নানা হুমকি দিয়েছিলেন। যার জের ধরে তিনি (শহিদুজ্জামান) খুন হতে পারেন বলে তাঁর অভিযোগ।

 

তবে স্বতন্ত্র প্রার্থীর অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন নৌকা প্রতীকের বিজয়ী সংসদ সদস্য মোরশেদ আলম। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ১০ বছর তিনি নোয়াখালী-২ আসনে সংসদ সদস্য ছিলেন। দীর্ঘ এই সময়ে এলাকায় কোনো ধরনের রাজনৈতিক সহিংসতা কিংবা হত্যাকাণ্ড ঘটেনি। নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী তাঁকে সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করতে অপপ্রচারে নেমেছেন। তবে হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি জানার পর তিনি তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার জন্য সোনাইমুড়ী থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।


মামলার এজাহারে বাদী শারমিন আক্তার উল্লেখ করেন, তিনি দুই সন্তান নিয়ে ঘটনার ২০-২২ দিন আগে বাবার বাড়িতে যান। তাঁর অবর্তমানে স্বামী শহিদুজ্জামান পূর্ব মির্জানগর গ্রামের নতুন বাড়িতে একা থাকতেন এবং মুরগি ও মাছের খামার দেখাশোনা করতেন। শনিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে স্বামীর সঙ্গে তাঁর সর্বশেষ কথা হয়। এরপর রাত সাড়ে আটটা থেকে সাড়ে নয়টার মধ্যে পূর্ব শত্রুতাবশত অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা তাঁর স্বামীকে গুলি করে হত্যা করে।

 

সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, প্রাথমিক তদন্তে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার আসামিরাসহ অন্য আসামিরা পূর্বশত্রুতার জেরে শহিদুজ্জামানকে গুলি করে হত্যা করেছে বলে মনে হচ্ছে। গ্রেপ্তার আসামিদের রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।

 

৭ জানুয়ারি নির্বাচনে নোয়াখালী-২ আসনে মোরশেদ আলম নৌকা প্রতীকে ৫৬ হাজার ১৮৬ ভোট পেয়ে জয়ী হন। স্বতন্ত্র (কাঁচি) প্রার্থী মোহা. আতাউর রহমান ভূঁইয়া পান ৫২ হাজার ৮৬৩ ভোট।

 

  • নিউজ ভিউ ১৪৬