অপরাধ সূত্র :
হাবিবুল্লাহ বাহার হাবিব সাতক্ষীরা জেলা সংবাদদাতা।। সাতক্ষীরায় দুটি হত্যা মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) সাতক্ষীরা আমলী আদালত ১ এ মামলা দুটি দায়ের হয়েছে। পৃথক এই দুটি হত্যা মামলায় এক নম্বর আসামি করা হয়েছে সাবেক এসপি চৌধুরী মঞ্জুরুল কবিরকে। এছাড়া, এএসপি কাজী মনিরুজ্জামান,সদর থানার ওসি এনামুল হক, তদন্ত ওসি আমিনুল ইসলাম বিপ্লব, শেখ নাসিরউদ্দিন, ডিবির পরিদর্শক এনামুল হক, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসক নজরুল ইসলাম, কলারোয়া উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য ফিরোজ আহমেদ স্বপন, সদর থানার এসআই কামাল হোসেন, মানবজমিনের সাবেক সাতক্ষীরা প্রতিনিধি ইয়ারব হোসেনসহ ৭৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ত্রিশ চল্লিশ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলা দুটির শুনানি শেষে আদালত সদর থানার ওসিকে এফ আই আর হিসেবে রেকর্ড করার নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন বাদী পক্ষের আইনজীবীরা। একটি মামলার বাদী সলেমান সরদার। তিনি সদর থানার গোবিন্দকাটি গ্রামের বরকতুল্লাহ সরদারের ছেলে। আদালতে তার দায়েরকৃত এজাহার থেকে নেয়া সংক্ষিপ্ত বর্ণনা এমন যে, বিগত আওয়ামী সরকারের গণবিরোধী কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে ২০১৩ সালের ডিসেম্বরের ২২,২৩ ও ২৪ তারিখ অবরোধ কর্মসূচির ডাক দেয় জামায়াত ইসলামী ও বিএনপি। সাতক্ষীরায় এই কর্মসূচি পালনে তার (বাদী) শ্যালক গোবিন্দকাটি গ্রামের লোকমান দফাদারের ছেলে হাফিজুর রহমান (২২) যোগ দেয়। তিন দিনের কর্মসূচির শেষ দিন ২৪ ডিসেম্বর সকাল অনুমান সাতটার সময় ঝাউডাঙা বাজার মহাসড়কে অবরোধ চলাকালে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতা সহ অন্যান্য আসামিরা দলবদ্ধভাবে তাদের ধাওয়া করে। এবং হাফিজুরকে ধরে নিষ্ঠুর ও নির্মমভাবে পেটাতে থাকে। একপর্যায়ে সকাল আনুমানিক সাড়ে নয়টার সময় এসপি চৌধুরী মঞ্জুরুল কবিরের নির্দেশে পুলিশের এসআই কামাল হোসেন হাফিজুরকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেয়। অপর এক পুলিশ সদস্য তার বুকের ওপর পা তুলে দিয়ে নাকের মধ্যে রাইফেলের গুলি করে। গুলি নাকের মধ্যে দিয়ে মাথার তালু ভেদ করে ঘিনুসহ বের হয়ে যায়। এই মামলায় ৪৩ জনের নাম উল্লেখসহ ১৫-২০ জনকে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে। অপর হত্যা মামলার বাদীর নাম মোঃ ইসরাইল মোড়ল। তিনি সদর থানার পাথরঘাটা গ্রামের একব্বার মোড়লের ছেলে। মামলার বর্ননা থেকে সংক্ষিপ্তভাবে নেওয়া, তার (বাদী) বড় ভাই ইসমাইল মোড়ল একজন মাছের ঘের ব্যবসায়ী। তিনি এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের মধ্যে অন্যতম। এলাকার মানুষের সমস্যা সমাধান ও বিচার শালিস করে থাকেন। আর এজন্যই ঈর্ষান্বিত ও হিংসায় ২০১৪ সালের ১০ জুন বিকেলে কলারোয়া উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতা (সাবেক সংসদ সদস্য) ফিরোজ আহমেদ স্বপনের বাড়িতে বৈঠক করে মামলায় বর্নিত সাত থেকে তের নম্বর আসামিরা। ওই বৈঠকে তার ভাইকে হত্যার সিদ্ধান্ত হয়। সেমোতাবেক ১৩ জুন রাতে নিজ বাড়িতে ঘুমিয়ে থাকা ভাই ইসমাইলকে আসামিরা ডেকে তুলে। তারা তাকে ধরে বাড়ির উঠানে নিয়ে বেধড়ক পেটায়। পরবর্তীতে এক নম্বর আসামি চৌধুরী মঞ্জুরুল কবিরের নির্দেশে তাকে রাত দুটোর দিকে ছয়ঘরিয়া তিন রাস্তার মোড়ে নিয়ে যায়। এবং চোখ বাঁধা অবস্থায় তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এঘটনায় বাদী ৩৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ১৫-২০ জনকে আসামি করেছেন।